img

দুই পায়ে মোট আটবার অস্ত্রোপচার। পা বাঁচাতে যখন মাশরাফিকে না খেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘পায়ে গুলি খেয়ে যদি মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করতে পারে, তাহলে আমি কেন সামান্য সার্জারি নিয়ে মাঠে খেলতে পারবো না?’দৃঢ়চেতা মনোভাব, ব্যক্তিত্ব আর সহজাত ক্রিকেটীয় মেধার সঙ্গে দারুণ নেতৃত্বগুণ অন্য আরো ১০ জন ক্রিকেটার থেকে আলাদা করে চিনিয়েছে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। তিনিই দেখিয়েছেন কেবল তীব্র ইচ্ছাশক্তি আর দেশের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা থাকলে- অনেক কিছুই সম্ভব।ম্যাচ জিতিয়ে গোটা দেশ যখন আনন্দে মাতে, মাশরাফি তখন হাঁটুর ব্যাথায় কাতরান ড্রেসিংরুমে।  ক্রিকেটে তাঁর মতো ইনজুরি জয় করা খেলোয়াড় আর একজন আছেন বলে ইতিহাস সাক্ষী দেয় না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনি তাই ধ্রুবতারা!

একটু একটু করে বেড়ে ওঠা আজকের মাশরাফির। ধারাবাহিকভাবে জয় করেছে হাজারও ক্রিকেটপ্রেমীর মন। শুধু খেলা দিয়ে নয়, বিনয় আর লড়াকু মনোভাবের সঙ্গে সহজাত নেতৃত্বের গুণ তাঁকে আর দশটা ক্রিকেটার থেকে আলাদা করে রেখেছে। ইনজুরিতে পড়ে পায়ে অপারেশনের এখন আর কোনো জায়গা বাকি নেই! তবুও তিনি বারবার মাঠে ফিরেছেন ক্রিকেটকে ভালোবেসে। জীবন বাজি রেখে, দেশকে ভালোবেসে খেলে গেছেন দেশের জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। ক্রিকেটে যতটা লড়াকু, ব্যক্তি হিসেবে ততটাই বিনয়ী মাশরাফি। আর এই বিনয়ে বশ বাংলার কোটি মানুষ। সহজাত বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা তো আছেই; সঙ্গে ভালোবাসা ও উদারতার এক উদাহরণও তিনি। এই তো কদিন আগে নিরপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে মাঠে ঢুকে পড়া এক ভক্তকে যেভাবে বুকে টেনে নিলেন, তা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে হাজারও ক্রিকেটপ্রেমীর। পরে তো আবার নিরাপত্তাকর্মীদের হাত থেকে তাঁকে রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে গেলেন নিজেই।

এতো ইনজুরির ঝাপ্টা পেরিয়ে মাশরাফিকে তো যেতেই হতো একদিন। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এই বিদায় মানতে পারছেন না অনেক অনুরাগীই। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে ৬ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার দিনটা তাই কালো অক্ষরে লেখা থাকবে প্রিয় ক্যাপ্টেনের টি টোয়েন্টি থেকে বিদায়ের দিন হিসেবেই।

এই বিভাগের আরও খবর